বাংলাদেশে জমি-জমার মালিকানা নিয়ে বিরোধ একটি চিরাচরিত সমস্যা। এই সমস্যার মূল কারণ হলো সঠিক ভূমি রেকর্ড সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং পর্চা বা খতিয়ান অনুসন্ধানে জটিলতা। খতিয়ান হল ভূমির মালিকানা প্রমাণের অন্যতম একটি দলিল যা বাংলাদেশ জরিপ বিভাগ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত জমির বিস্তারিত তথ্যসম্বলিত একটি আনুষ্ঠানিক নথি। আধুনিক ডিজিটাল যুগে এসে সরকার ভূমি সেবাকে অনলাইনে নিয়ে এসেছে, যা জনগণের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
পর্চা অনুসন্ধান হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনি আপনার জমির সঠিক মালিকানা, পরিমাণ, অবস্থান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সহজেই খুঁজে বের করতে পারেন। এই প্রক্রিয়াটি এখন আর শুধুমাত্র ভূমি অফিসে গিয়ে সময় ও অর্থ ব্যয় করার বিষয় নয়, বরং ঘরে বসেই মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে করা যায়।
পর্চা ও খতিয়ান কি?
পর্চা/খতিয়ানের সংজ্ঞা
মৌজা ভিত্তিক এক বা একাধিক ভূমি মালিকের ভূ-সম্পত্তির বিবরণ সহ যে ভূমি রেকর্ড জরিপকালে প্রস্ত্তত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। এটি একটি ফারসি শব্দ যা ভূমির মালিকানা নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত হয়। জমির খতিয়ানে মালিকের নাম, দাগ নাম্বার, জমির পরিমাণ শতাংশ ইত্যাদি উল্লেখ থাকে।
খতিয়ানের গুরুত্ব
খতিয়ান বা পর্চা জমি সংক্রান্ত যে কোনো আইনি কার্যক্রমে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি জমির মালিকানা প্রমাণ করার পাশাপাশি নিম্নলিখিত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়:
- জমি ক্রয়-বিক্রয়ের সময় মালিকানা যাচাই
- আদালতে জমির মালিকানা প্রমাণ
- ব্যাংক থেকে লোনের জন্য জমি বন্ধক রাখা
- জমি খারিজ বা নামজারির জন্য
- ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান
বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের জরিপ ও খতিয়ান
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের ভূমি জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি জরিপের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য এবং গুরুত্ব রয়েছে।
জরিপের নাম | সময়কাল | বৈশিষ্ট্য |
---|---|---|
CS (Cadastral Survey) | ১৮৮৮-১৯৪০ | প্রথম জরিপ, জমিদারি প্রথা |
SA (State Acquisition) | ১৯৫৬-১৯৬২ | জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর |
RS (Revisional Survey) | ১৯৭০-চলমান | SA জরিপের সংশোধন |
BS (Banglabandha Survey) | ১৯৯৮-চলমান | আধুনিক জরিপ |
City Survey | বিশেষ এলাকায় | শহর এলাকার জন্য |
CS (Cadastral Survey) জরিপ
“সিএস” হলো Cadastral Survey (CS) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। একে ভারত উপমহাদেশের প্রথম জরিপ বলা হয় যা ১৮৮৮ সাল হতে ১৯৪০ সালের মধ্যে পরিচালিত হয়। CS খতিয়ান চিনবার উপায় হচ্ছে, (১) এটি হবে দুই পৃষ্ঠার অর্থাৎ উভয় পৃষ্ঠার হবে। (২) এই খতিয়ানটি হবে লম্বালম্বি।
SA (State Acquisition) জরিপ
১৯৫০ সালে জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হওয়ার পর সরকার ১৯৫৬ সালে সমগ্র পূর্ববঙ্গ প্রদেশে জমিদারী অধিগ্রহনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। SA খতিয়ান চিনবার উপায় হচ্ছে, (১) এই খতিয়ানটি হবে এক পৃষ্ঠার। (২) এই খতিয়ানটি ছবির মত আড়াআড়ি হবে।
RS (Revisional Survey) জরিপ
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে 1970 সালে পাকিস্তান আমলের প্রস্তুতকৃত এস এ খতিয়ানের বিভিন্ন ভুল সংশোধন করার লক্ষ্যে ভূমি জরিপ কার্যক্রম চালু হয়। এই জরিপটি বর্তমানে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য এবং বহুল ব্যবহৃত।
BS (Banglabandha Survey) জরিপ
১৯৯৮ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত চলমান ভূমি জরিপ থেকে প্রস্তুতকৃত নথিকে বি এস খতিয়ান বলা হয়। এটি সবচেয়ে আধুনিক এবং নির্ভুল জরিপ।
অনলাইনে পর্চা অনুসন্ধানের সুবিধা
ডিজিটাল বাংলাদেশের এই যুগে পর্চা অনুসন্ধান অনলাইনে করার অনেক সুবিধা রয়েছে:
সময় সাশ্রয়
- ঘরে বসেই ২৪/৭ সেবা পাওয়া যায়
- দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই
- মাত্র কয়েক মিনিটেই ফলাফল পাওয়া যায়
খরচ সাশ্রয়
- পরিবহন খরচ বাঁচে
- অফিস সময়ের বাইরেও কাজ করা যায়
- দালালদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়
স্বচ্ছতা ও নির্ভরযোগ্যতা
- সরাসরি সরকারি ডেটাবেস থেকে তথ্য
- ভুল তথ্যের সম্ভাবনা কম
- তাৎক্ষণিক যাচাইয়ের সুবিধা
অনলাইনে পর্চা অনুসন্ধানের ধাপে ধাপে নির্দেশনা
ধাপ ১: সরকারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ
অনলাইনে dlrms.land.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে এবং e khatian মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে খতিয়ান ও দাগের তথ্য অনুসন্ধান করার মাধ্যমে সার্টিফাইড কপি এর আবেদন করতে পারবেন।
প্রধান সরকারি ওয়েবসাইটসমূহ:
- DLRMS: https://dlrms.land.gov.bd/
- ভূমি তথ্য বাতায়ন: https://land.gov.bd/
- Settlement সাইট: https://settlement.gov.bd/
ধাপ ২: খতিয়ানের ধরন নির্বাচন
আপনি প্রথমে কি ধরনের খতিয়ান/পর্চা অনুসন্ধান করতে চান তা বাছাই করে নিতে হবে। নিম্নোক্ত অপশনগুলো থেকে যেকোনো একটি বেছে নিন:
- সার্ভে খতিয়ান: CS, SA, RS, BS খতিয়ান
- নামজারি খতিয়ান: সর্বশেষ আপডেট তথ্য
- মালিকানা অনুসন্ধান: নাম দিয়ে খোঁজ
ধাপ ৩: এলাকা নির্বাচন
প্রথমে ভিজিট করুন ভূমি তথ্য বাতায়ন DLRMS ওয়েবসাইট এর পরে খতিয়ান সিলেক্ট করুন- সার্ভে কিংবা নামজারি অতঃপর ধারণা অনুযায়ী প্রথমে বিভাগ> জেলা> উপজেলা নির্বাচন করুন।
নির্বাচনের ক্রম:
- বিভাগ (যেমন: ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ইত্যাদি)
- জেলা
- উপজেলা/থানা
- মৌজা
ধাপ ৪: খোঁজার তথ্য প্রবেশ
আপনারা দাগ নং অথবা খতিয়ান নং অথবা মালিকানা নাম দিয়ে সার্ভে বা নামজারি খতিয়ান খুঁজে দেখতে পারবেন।
অনুসন্ধানের মাধ্যমসমূহ:
- দাগ নম্বর
- খতিয়ান নম্বর
- মালিকের নাম
- পিতার নাম
ধাপ ৫: ফলাফল যাচাই ও ডাউনলোড
পরবর্তীতে “খুঁজুন” বাটনে ক্লিক করলে আপনাদের দাগ নং ও মালিকানা নাম ইত্যাদি তথ্য দেখা যাবে। আপনি চাইলে এখানে খতিয়ান আবেদন অপশনে ক্লিক করলে সার্টিফাইড খতিয়ান কপি ডাউনলোড করতে পারবেন শুধুমাত্র ১০০ টাকা প্রদানের মাধ্যমে।
মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পর্চা অনুসন্ধান
e-Khatian অ্যাপ ডাউনলোড
Google Play Store থেকে DLRMS মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করে নিন এর পরে যথাক্রমে এপ্লিকেশনটি ইন্সটল করে ওপেন করুন।
অ্যাপ ব্যবহারের পদ্ধতি
- অ্যাপ চালু করুন
- খতিয়ানের ধরন নির্বাচন করুন
- এলাকার তথ্য দিন
- অনুসন্ধান করুন
- ফলাফল দেখুন
মোবাইল অ্যাপের সুবিধা
- যেকোনো সময় ব্যবহার করা যায়
- ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই যথেষ্ট
- ব্যবহার করা সহজ
- দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়
খতিয়ান অনুসন্ধানের ফি ও পেমেন্ট পদ্ধতি
ফি এর পরিমাণ
অনলাইনে আবেদন করে পর্চা বের করতে ১০০ টাকা লাগে। অনলাইনে পর্চার জন্য সরকার নির্ধারিত ফি ১০০ টাকা। আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করতে ৫০ টাকা ফি পরিশোধ করে খতিয়ানের সার্টিফিকেট কপি সংগ্রহ করতে পারবেন।
সেবার ধরন | ফি |
---|---|
অনলাইন খতিয়ান দেখা | বিনামূল্যে |
সার্টিফাইড কপি (RS) | ৫০ টাকা |
সার্টিফাইড কপি (অন্যান্য) | ১০০ টাকা |
প্রিমিয়াম সার্ভিস | ১৫০ টাকা |
পেমেন্ট পদ্ধতি
বিকাশ/নগদ/উপায় ও রকেট অ্যাপ হতে ফি পরিশোধ করা যায়। উপলব্ধ পেমেন্ট পদ্ধতিগুলো হলো:
- বিকাশ (bKash)
- নগদ (Nagad)
- রকেট (Rocket)
- উপায় (Upay)
- অনলাইন ব্যাংকিং
পর্চা অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় তথ্য
মৌলিক তথ্য
অনুসন্ধানের জন্য নিম্নলিখিত তথ্যগুলো প্রয়োজন:
অবশ্যক তথ্য:
- জেলা ও উপজেলার নাম
- মৌজার নাম
- দাগ নম্বর অথবা খতিয়ান নম্বর
অতিরিক্ত তথ্য:
- জমির মালিকের নাম
- পিতার নাম
- জমির পরিমাণ
- কিত্তা নম্বর
তথ্য সংগ্রহের উৎস
তথ্য সংগ্রহের জন্য নিম্নলিখিত উৎসগুলো ব্যবহার করতে পারেন:
- পুরাতন খতিয়ান বা পর্চা
- দাগ নম্বর থেকে তথ্য
- স্থানীয় ভূমি অফিস
- পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে
- দলিল-পত্র থেকে
Related: সার্ভে খতিয়ান অনুসন্ধান
সমস্যা ও সমাধান
সাধারণ সমস্যাসমূহ
সমস্যা ১: তথ্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না
বিঃদ্রঃ বিএস পর্চা কিংবা খতিয়ান একটি চলমান ভূমি জরিপ তাই এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জেলা কিংবা উপজেলার মৌজা সমূহের রেকর্ড অনলাইনে অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
সমাধান:
- অন্য ধরনের খতিয়ান (CS, SA, RS) দিয়ে চেষ্টা করুন
- স্থানীয় ভূমি অফিসে যোগাযোগ করুন
- তথ্য সঠিক কিনা পুনরায় যাচাই করুন
সমস্যা ২: ওয়েবসাইট লোড হচ্ছে না
সমাধান:
- ইন্টারনেট সংযোগ যাচাই করুন
- অন্য ব্রাউজার ব্যবহার করুন
- মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করুন
- পরে আবার চেষ্টা করুন
সমস্যা ৩: পেমেন্ট সমস্যা
সমাধান:
- মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে যথেষ্ট টাকা আছে কিনা নিশ্চিত করুন
- সঠিক পিন দিয়েছেন কিনা যাচাই করুন
- বিকল্প পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করুন
আইনি দিক ও সতর্কতা
খতিয়ানের আইনি মর্যাদা
এই ওয়েব পোর্টালে দৃশ্যমান সকল খতিয়ানই খসড়া খতিয়ান অর্থাৎ চূড়ান্ত খতিয়ান নয়। জরিপের যেকোন স্তরেই এই খতিয়ানসমূহের যে কোন তথ্য পরিবর্তন হতে পারে।
সতর্কতা
- সার্টিফাইড কপি: অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান করে, আপনি চাইলে ই-পর্চা ডাউনলোড করে অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে এটি সার্টিফাইড কপি হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে না।
- যাচাই: অনলাইনে পাওয়া তথ্য স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে যাচাই করুন
- আইনি কাজে: গুরুত্বপূর্ণ আইনি কাজের জন্য সার্টিফাইড কপি ব্যবহার করুন
Related: খতিয়ান অনলাইন আবেদন
বিকল্প পদ্ধতি: অফলাইন অনুসন্ধান
স্থানীয় ভূমি অফিস
যদি অনলাইনে তথ্য পাওয়া না যায়, তাহলে নিম্নলিখিত অফিসগুলোতে যোগাযোগ করুন:
- তহসিল অফিস
- সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস
- উপজেলা নির্বাহী অফিসার অফিস
- জেলা প্রশাসক অফিস
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- জাতীয় পরিচয়পত্র
- সংশ্লিষ্ট এলাকার বিবরণ
- পূর্ববর্তী খতিয়ান (যদি থাকে)
- আবেদনপত্র
প্রযুক্তিগত সহায়তা
হেল্পলাইন নম্বর
সরকারি হেল্পলাইন নম্বরসমূহ:
- জাতীয় কল সেন্টার: ৩৩৩
- ভূমি সেবা হেল্পলাইন: ১৬১২২
- ডিজিটাল সেবা: ১০৯
সহায়তা কেন্দ্র
- ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার
- উপজেলা প্রশাসন
- জেলা প্রশাসন
- সরকারি সেবা কেন্দ্র
FAQ – প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
১. অনলাইনে পর্চা অনুসন্ধান কি বিনামূল্যে?
হ্যাঁ, মূল তথ্য দেখা বিনামূল্যে। তবে সার্টিফাইড কপি ডাউনলোড করতে ৫০-১০০ টাকা ফি দিতে হয়।
২. কোন খতিয়ানটি সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য?
যে সমস্ত জায়গা গুলোতে এখন পর্যন্ত বিএস খতিয়ান জরিপ চলমান রয়েছে সেই সমস্ত জায়গার ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে BS খতিয়ান। অন্যথায় RS খতিয়ান সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য।
৩. নাম দিয়ে কি জমির খতিয়ান খোঁজা যায়?
একজন ব্যক্তির এনআইডি কার্ডে হুবহু যে নাম দেয়া রয়েছে সেই নাম দিয়ে সার্চ করলে হয়তোবা পাওয়া যেতে পারে, অধিকতর অনুসন্ধান অপশনে গিয়ে ব্যক্তির নাম দিয়ে অনুসন্ধান করতে পারবেন
৪. অনলাইন খতিয়ান কি আদালতে গ্রহণযোগ্য?
প্রাথমিক তথ্যের জন্য ব্যবহার করা যায়, কিন্তু আদালতে সার্টিফাইড কপি প্রয়োজন।
৫. সার্টিফাইড কপি কিভাবে পাবো?
খতিয়ান তালিকার নিচে ‘খতিয়ান আবেদন’ লেখাটিতে ক্লিক করে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপির জন্য আবেদন করতে হবে।
৬. যদি অনলাইনে তথ্য না পাওয়া যায়?
আর কোনভাবে আপনার তথ্যগুলো যদি সার্ভারে না মিলে অর্থাৎ আপনার খতিয়ানটি যদি অনলাইনে খুঁজে পাওয়া না যায় সে ক্ষেত্রে স্থানীয় ভূমি অফিসে গিয়ে অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন।
৭. কতদিন পর খতিয়ান আপডেট হয়?
জরিপের ধরন অনুযায়ী আলাদা। BS জরিপ চলমান এবং নিয়মিত আপডেট হয়।
৮. একই জমির একাধিক খতিয়ান থাকতে পারে?
হ্যাঁ, বিভিন্ন জরিপের কারণে একই জমির CS, SA, RS, BS খতিয়ান থাকতে পারে।
৯. মোবাইল অ্যাপ কি নিরাপদ?
সরকারি DLRMS অ্যাপ সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং সরাসরি সরকারি ডেটাবেসের সাথে যুক্ত।
১০. দাগ নম্বর কি?
যখন জরিপ ম্যাপ প্রস্তুত করা হয় তখন মৌজা নক্সায় ভূমির সীমানা চিহ্নিত বা সনাক্ত করার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদা আলাদ নাম্বার দেয়া হয়। আর এই নাম্বারকে দাগ নাম্বার বলে।
উপসংহার
পর্চা অনুসন্ধান বর্তমানে আর কোনো জটিল প্রক্রিয়া নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের এই যুগে সরকার জনগণের কাছে ভূমি সেবা পৌঁছে দিতে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ভূমি সেবাকে আরো এগিয়ে নিতে ই-নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, নামজারি খতিয়ান, ডিজিটাল ল্যান্ড রেকর্ড,আর এস খতিয়ান, রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা,বাজেট ব্যাবস্থাপনা,অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থাপনা,উত্তরাধিকার অ্যাপ, ই-বুক অ্যাপ সহ অনলাইয়ে পর্চা বা খতিয়ান অনুসন্ধানের জন্য নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আজকের এই গাইডে আমরা দেখেছি যে কিভাবে সহজেই ঘরে বসে মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে আপনার জমির খতিয়ান বা পর্চা অনুসন্ধান করতে পারেন। এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি সময়, অর্থ এবং কষ্ট সাশ্রয় করতে পারবেন।
তবে মনে রাখবেন যে, অনলাইন সেবা একটি প্রাথমিক পদ্ধতি। যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ আইনি কাজের জন্য অবশ্যই সার্টিফাইড কপি ব্যবহার করুন এবং প্রয়োজনে স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে যাচাই করুন।
ভবিষ্যতে আরো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভূমি সেবা আরো সহজ এবং নির্ভরযোগ্য হবে। এই পদ্ধতিগুলো রপ্ত করে আপনি আপনার জমির সঠিক তথ্য জানতে পারবেন এবং যেকোনো ধরনের প্রতারণা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- সর্বদা সরকারি ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন
- প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করুন
- সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করুন
- সন্দেহজনক ক্ষেত্রে স্থানীয় ভূমি অফিসে যোগাযোগ করুন
এই গাইড অনুসরণ করে আপনি সহজেই আপনার জমির পর্চা অনুসন্ধান করতে পারবেন এবং আপনার সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন।